মাল্টা সাইট্রাস পরিবারভুক্ত একটি বিদেশি ফল। কমলা আর বাতাবি লেবুর সংকরায়ণে এ ফলের সৃষ্টি। এর ইংরেজি নাম সুইট অরেঞ্জ। হিন্দিতে সান্তারা। অন্য ভাষায় ভিন্ন নাম। এর আদি উৎপত্তিস্থল ভিয়েতনাম, দক্ষিণ চীন এবং উত্তর-পশ্চিম ভারত। রোগির পথ্য হিসেবে মাল্টা হিতকর। খেতে সুস্বাদু। দারুণ গন্ধ। মাল্টায় পুষ্টিতে ভরপুর। পুষ্টিবিদদের মতে, এর প্রতি ১০০ গ্রাম ফলে (আহারোপযোগী) ২০০ মিলিগ্রাম ক্যারোটিন এবং ভিটামিন সি আছে প্রায় ৫০ মিলিগ্রাম। অন্য পুষ্টি উপাদানের মধ্যে শর্করা, আমিষ, চর্বি, ক্যালসিয়াম, লৌহ, ভিটামিন বি১, ভিটামিন বি২ এবং খাদ্যশক্তি রয়েছে যথাক্রমে ১২ মিলিগ্রাম, ১ মিলিগ্রাম, ০.২ মিলিগ্রাম, ৪০ মিলিগ্রাম, ০.৮ মিলিগ্রাম, ০.১১৩ মিলিগ্রাম, ০.০৪৬ মিলিগ্রাম এবং ২০০ কিলোক্যালরি। এতে কিছু ঔষধিগুণও আছে। সর্দিজ্বর কমাতে মাল্টা বেশ উপকারী। এর খোসা দিয়ে প্রসাধনী তৈরি হয়। এছাড়া ওষুধ শিল্পেও ব্যবহার হয়। বিশ্বে ফলটি বেশ জনপ্রিয়। তেমনি এদেশেও। কৃষি বিজ্ঞানীদের মতে, কমলা লেবুর তুলনায় এর অভিযোজন ক্ষমতা বেশি। তাই চাষের জন্য পাহাড়ি এলাকা উৎকৃষ্ট। তবে হালকা লবণ মাটিতে এর মিষ্টতা এবং ফলন ভালো। এমনি প্রমাণ খুঁজে পাওয়া যায় পিরোজপুর সদরের বেশ কয়টি গ্রামে। ওখানে ছোট-বড় দুই শতাধিক বাগান রয়েছে। ভরা মৌসুমে থোকায় থোকায় ধরা ফলগুলো দেখলে কার না ভালো লাগে! শুধু দৃষ্টিনন্দনই নয়, ফলগুলো প্রচুর মিষ্টি এবং রসালো। এসব গুণের কথা শুনে দক্ষিণের অন্য জেলাগুলোতেও নতুন নতুন বাগান স্থাপন হচ্ছে। এভাবে ছড়িয়ে পড়েছে পুরো অঞ্চলে। তাই বলতেই হয়; মাটি, পানি ও আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় দক্ষিণাঞ্চল মাল্টা চাষের বিরাট সম্ভাবনাময়।

👉জলবায়ু

শুষ্ক ও উষ্ণ জলবায়ু মাল্টা চাষের জন্য উত্তম। বায়ুর আর্দ্রতা এবং বৃষ্টিপাত ফলের গুণাগুণকে প্রভাবিত করে। অতি বৃষ্টিতে ফল বেশি রসালো হয়। এছাড়া খোসা পাতলার পাশাপাশি গুণগতমান হয় নিম্ন। রোগ-পোকার আক্রমণ বেড়ে যায়। তবে শুষ্ক আবহাওয়া ফলের স্বাদ ও মানকে করে উন্নত।

👉মাটি

মাল্টা প্রায় সব ধরনের মাটিতে জন্মে। তবে ছায়া পড়ে না এমন সুনিষ্কাশিত উর্বর, মধ্যম থেকে হালকা দো-আঁশ মাটি চাষের জন্য সবচেয়ে ভালো। মাটির অম্লত্ব ৫.৫ থেকে ৬.৫ হওয়া উত্তম। মাল্টাগাছ লবণ এবং উচ্চ তাপমাত্রা সংবেদনশীল। জলাবদ্ধতার সহ্যক্ষমতা নেই।

👉জাত

দেশি বিদেশি বিভিন্ন জাত রয়েছে। তবে এদেশে চাষ উপযোগী জাতের মধ্যে বারি মাল্টা-১ অন্যতম। বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট উদ্ভাবিত এ জাতটি উচ্চফলনশীল। গাছের ডালপালা ছড়ানো এবং ঝোপানো থাকে। মধ্য ফাল্গুন (মার্চ) থেকে মধ্য চৈত্রে (এপ্রিল) ফুল আসে। ফল পাকে কার্তিক মাসে। ফল দেখতে সবুজ। তবে পরিপক্ব অবস্থায় কিছুদিন রেখে দিলে কমলা রঙ ধারণ করে। ফলের নিচে ছোট গোলাকার চিহ্ন থাকে। প্রতিটির ওজন প্রায় ১৫০ গ্রাম। ফলের শাসের রঙ হালকা হলুদ। গাছপ্রতি ফল ধরে ৩০০ থেকে ৪০০। সে হিসেবে হেক্টরপ্রতি গড় ফলন প্রায় ২০ টন। বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় একটি জাত উদ্ভাবন করেছে। নাম এফটিআইপি বাউ মাল্টা-১। প্রতিটি ফলের ওজন ১৭০ হতে ২০০ গ্রাম। মিষ্টতা ১৭-২১ টি.এস.এস.। গাছ বামনাকৃতি। বিচি কম হয়। ফল রসালো ও মিষ্টি। মার্চএপ্রিল মাসে ফুল আসে। সেপ্টেম্বরÑঅক্টোবরে ফল পাকে।

👉কলম

বীজ ও অঙ্গজ উভয় পদ্ধতিতে মাল্টার বংশবিস্তার হয়। তবে মাতৃগুণ বজায় রাখা, দ্রুত ফল ধরা, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানো এবং অধিক ফলন পেতে অঙ্গজ পদ্ধতি ব্যবহার করতে হবে। জোড় কলম (গ্রাফটিং) ও চোখ কলমের (বাডিং) মাধ্যমে চারা উৎপাদন করা যায়। জোড় কলমের জন্য রুটস্টক (আদি জোড়) নির্বাচন করতে হয়। এক্ষেত্রে বাতাবি লেবুর চারা ব্যবহার উত্তম। এরপর মাতৃগাছ হতে সায়ন (উপজোড়) সংগ্রহ করে রুটস্টকের ওপর স্থাপন করে গ্রাফটিং তৈরি করা হয়। আদি জোড়ের জন্য এক থেকে দেড় বছরের সুস্থ, সতেজ এবং সোজা চারা বেছে নিতে হবে। সায়নে অবশ্যই কমপক্ষে দুইটি চোখসহ ২/৩ ইঞ্চি লম্বা থাকা চাই। এছাড়া ডালের বয়স যেন ৮/৯ মাস হয়। সাধারণত ১০-১২ দিন পর সংযোগস্থলে জোড়া লাগে। তখন সায়নের সুপ্ত কুঁড়ি থেকে পাতা বের হয়। একাধিক ডাল বের হলে ভালোটি রেখে বাকিগুলো কেটে দিতে হবে। কলমের নিচের অংশে কোনো কুঁড়ি বা ডাল যেন না থাকে। মধ্য বৈশাখ হতে মধ্য ভাদ্র (মে-আগস্ট) গ্রাফটিং করার উপযুক্ত সময়।

👉চারা প্রাপ্তিস্থান

চারা অবশ্যই মানসম্মত হওয়া চাই। চাষাবাদের ক্ষেত্রে অন্য সব কাজগুলো সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করা হলে ও জাত নির্বাচন ভুল হলে কাক্সিক্ষত ফলন হবে না। তাই নিশ্চিত হয়েই চারা ব্যবহার করতে হবে। এক্ষেত্রে সরকারি প্রতিষ্ঠান হর্টিকালচার সেন্টার এবং বেসরকারি বিশ্বস্ত নার্সারি থেকে সংগ্রহ করা উত্তম।

👉রোপণ পদ্ধতি

ষড়ভুজ এবং বর্গাকার উভয় পদ্ধতিতে চারা লাগানো যায়। সারা বছরই রোপণ করা যেতে পারে। তবে বর্ষা মৌসুমে উত্তম। চারা লাগানোর আগে মাদা তৈরি করে নিতে হয়। এক্ষেত্রে গর্তের দৈর্ঘ্য, প্রস্থ ও উচ্চতা (গভীরতা) হবে ৭৫ সেন্টিমিটার (৩০ ইঞ্চি) করে। গর্তপ্রতি ১৫ কেজি পচা গোবর কিংবা অন্য জৈব সার, সেই সাথে ৫ কেজি কাঠের ছাই এবং রাসায়নিক সার হিসেবে টিএসপি ২৫০ গ্রাম, এমওপি ২৫০ গ্রাম, বরিক এসিড ৫ গ্রাম ও চুন দিতে হবে ৫০০ গ্রাম হারে। সম্পূর্ণ সার মাটির সাথে ভালোভাবে মিশিয়ে গর্ত ভরে দিতে হবে। ১৫ থেকে ২০ দিন পর গর্তের মাঝখানে সোজা করে চারা রোপণ করতে হবে। গাছ লাগানোর পর চারাটি শক্ত খুঁটি সাথে সামান্য ঢিলে করে বেঁধে দিতে হবে, যেন ঝড়ে হেলে না পড়ে।

👉সার ব্যবস্থাপনা

গাছের বৃদ্ধি এবং কাক্সিক্ষত ফল ধারণের জন্য বছরে তিন বার সার দেয়া দরকার। বর্ষার আগে মধ্য ফাল্গুন থেকে মধ্য চৈত্রে এবং মধ্য বৈশাখ হতে মধ্য জ্যৈষ্ঠে। বর্ষার পরে মধ্য ভাদ্র থেকে মধ্য আশি^ন মাসে। দুপুরবেলায় মাটিতে গাছের ছায়া যতটুকু পড়ে ততোটুকু স্থানে ৬ ইঞ্চি গভীর করে ভালোভাবে কুপিয়ে সার দেয়া উত্তম। অথবা গাছের গোড়া হতে ১ ফুট বাদ দিয়ে এরপর ৪ ফুট পরিমাণ জমি বৃত্তাকারে অনুরূপভাবে কুপিয়ে দিলেও হবে। সার প্রয়োগের পর সেচ দিতে হয়। গাছের বয়স বাড়ার সাথে সাথে খাবারের চাহিদাও বৃদ্ধি পায়। তাই বয়সভেদে যে পরিমাণ জৈব ও অজৈব সার দেয়া প্রয়োজন তা হলো-

প্রথমবারঃ মধ্য ফাল্গুন থেকে মধ্য চৈত্র মাসের মধ্যে(মার্চ মাসে)।

দ্বিতীয়বারঃ বর্ষার আগে মধ্য বৈশাখ থেকে মধ্য জ্যৈষ্ঠ মাসে (মে মাসে)।

তৃতীয়বারঃ বর্ষার পরে মধ্য ভাদ্র থেকে মধ্য আশ্বিনে (সেপ্টেম্বর মাসে)।

বছরে মোট এই তিনবারে সার প্রয়োগ করতে হবে, তবে সেচের ব্যবস্থা না থাকেল কেবল প্রথম ও শেষ মোট দুই বারে সার প্রয়োগ করাটাই উত্তম।

গাছের বয়স অনুসারে সারের মাত্রাঃ

১-২ বছর বয়সেঃ জৈব সার ১০ কেজি, ইউরিয়া ২৫০ গ্রাম, টিএসপি ১০০ গ্রাম, এমওপি ১৫০ গ্রাম, জিংক অক্সাইড ১০ গ্রাম এবং বরিক এসিড ৫ গ্রাম।

৩-৪ বছর বয়সেঃ জৈব সার ১৫ কেজি, ইউরিয়া ৩৫০ গ্রাম, টিএসপি ২০০ গ্রাম, এমওপি ২৫০ গ্রাম, জিংক অক্সাইড ১৫ গ্রাম এবং বরিক এসিড ৮ গ্রাম।

৫-৭ বছর বয়সেঃ জৈব সার ১৫ কেজি, ইউরিয়া ৫০০ গ্রাম, টিএসপি ২৫০ গ্রাম, এমওপি ২৫০ গ্রাম, জিংক অক্সাইড ২০ গ্রাম এবং বরিক এসিড ১০ গ্রাম।

৮-১০ বছর বয়সেঃ জৈব সার ২০ কেজি, ইউরিয়া ৬০০ গ্রাম, টিএসপি ৩৫০ গ্রাম, এমওপি ২৫০ গ্রাম, জিংক অক্সাইড ২৫ গ্রাম এবং বরিক এসিড ১২ গ্রাম।

১০ বছর বা তার অধিক বয়সেঃ জৈব সার ২৫ কেজি, ইউরিয়া ৭৫০ গ্রাম, টিএসপি ৫০০ গ্রাম, এমওপি ৫০০ গ্রাম, জিংক অক্সাইড ৩০ গ্রাম এবং বরিক এসিড ১৫ গ্রাম।

👉আগাছা পরিষ্কার

আগাছা খাবারে ভাগ বসায়। ক্ষতিকর পোকার আশ্রয়স্থল হিসেবে ব্যবহার হয়। তাই বাগান সবসময় আগাছামুক্ত রাখতে হবে। গাছের গোড়া হতে একটু দূরে শুকনো লতাপাতা, খড়, কুটা বিছিয়ে মালচিংয়ের ব্যবস্থা করলে ভালো হয়। এতে আগাছা জন্মাবে না। মাটির আর্দ্রতা বজায় থাকবে।

👉সেচ ও নিষ্কাশন

খাদ্য তৈরির জন্য পানি গাছের অত্যাবশ্যকীয় উপাদান। সেজন্য শীত মৌসুমে এবং অন্য সময় খরা দেখা দিলে গাছের গোড়ায় পানি দিতে হবে। তেমনি বর্ষার পানিতে জলাবদ্ধতা যেন না হয়, সেজন্য দ্রুত নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করতে হবে।

👉ফল পাতলাকরণ

কোনো কোনো কলমের গাছে প্রথম বছরে ফল আসতে পারে। তবে পরপর দুই বছর ফুল ভেঙে দেয়া উত্তম। এতে গাছের কা- মোটা হয়। ফলের সংখ্যা বৃদ্ধি পায়। পরিণত বয়সে প্রতিটি গাছে প্রচুর পরিমাণে ফল ধরে। পুরো ফল রাখা হলে এর আকার ও গুণগতমান হ্রাস পায়। তাই প্রতি বোঁটায় দুইটি রেখে অবশিষ্ট ফল ছোট (মার্বেল আকৃতি) অবস্থায় ছিঁড়ে ফেলতে হবে।

👉ব্যাগিং

ব্যাগিং ফলের জন্য আশীর্বাদ। চীনে উৎপাদিত এ ব্যাগ এখন আমাদের দেশেও পাওয়া যাচ্ছে। প্রতিটির মূল্য আড়াই থেকে তিন টাকা। ব্যাগিং করলে ক্ষতিকর পোকার আক্রমণ হয় না। তাই ফল পরিপক্বতার আগেই ছত্রাকনাশক (টিল্ট ২৫০ ইসি ০.৫ মিলিলিটার/১ লিটার) প্রয়োগ করে ব্যাগিং করতে হবে। এর কিছু বাড়তি সুবিধাও আছে। যেমন-পাতার ঘর্ষণ থেকে ফলকে রক্ষা করে। তীব্র সূর্যকিরণ থেকে রেহাই পাওয়া যায়। বিভিন্ন পাখি এবং বাঁদুরের উপদ্রব হয় না। ফল নিরাপদ হয়। পরিবেশ ভালো থাকে। বাজার মূল্য পাওয়া যায় বেশি। এ ব্যাগ দুই-তিন বছর ব্যবহার করা যায়। দেশীয় পদ্ধতিতে পলিথিন, কাপড় কিংবা বাটার পেপার দিয়ে ব্যাগিং করা যেতে পারে।

👉বালাই ব্যবস্থাপনা

মাল্টা ফসলে বিভিন্ন ধরনের পোকামাকড় এবং রোগের আক্রমণ হতে পারে। পোকার মধ্যে সাইলিড সবচেয়ে ক্ষতিকর। এছাড়া রয়েছে পাতা সুড়ঙ্গকারী পোকা, ফল ছিদ্রকারী পোকা, খোসা পোকা, উঁইপোকা। রোগগুলো হলো আগামরা রোগ, গ্রিনিং, ক্যাংকার এবং আঠাঝড়া।

👉সাইলিড পোকা :

পোকার বাচ্চা গাছের পাতা, পাতার বোঁটা, কচি ডগা এবং ফলের রস চুষে খায়। এতে গাছ দুর্বল হয়ে পড়ে। রস চোষার সময় এরা গাছের রসের মধ্যে গ্রিনিং রোগের ভাইরাস ছড়ায়। সেইসাথে মিষ্টি আঠালো পদার্থ নির্গত করে। প্রতিকার হিসেবে পোকাসহ আক্রান্ত পাতা বা ডাল অপসারণ করতে হবে। মে মাস থেকে অক্টোবর মাস পর্যন্ত প্রতি মাসে একবার ইমিডাক্লোপ্রিড গ্রুপের কীটনাশক যেমনÑঅ্যাডমায়ার বা ফেনিট্রথিয়ন জাতীয় কীটনাশক যেমন-সুমিথিয়ন ২ মিলিলিটার/লিটার পানিতে মিশিয়ে মাল্টা গাছে ভালোভাবে স্প্রে করতে হবে। তাহলে ডিম ও পোকা থাকলে ধ্বংস হবে। গ্রিনিং রোগ থেকে রেহাই পাওয়া যাবে।

👉পাতা সুড়ঙ্গকারী পোকা :
এ পোকা ছোট অবস্থায় (কীড়া) মাল্টা পাতায় আক্রমণ করে। এরা রাতের বেলা গাছের কচি পাতায় গর্ত খুঁড়ে আঁকা বাঁকা দাগের সৃষ্টি করে। আক্রান্ত পাতা কুঁকড়ে যায়। প্রতিকার হিসেবে আক্রান্ত অংশ কেটে ফেলতে হয়। তামাক নির্যাস ও সাবান গোলা পানি স্প্রে করা যেতে পারে। আক্রমণ বেশি হলে ইটাপ ৫০ এসপি ১.২০ গ্রাম হারে প্রতি লিটার পানিতে মিশিয়ে ভালোভাবে স্প্রে করতে হবে।

👉ফলের মাছি পোকা : 
এ পোকার আক্রমণে ফল নষ্ট হয়ে যায়। প্রতিকার হিসেবে সেক্স ফেরোমোন ফাঁদ ব্যবহার করে পোকা দমন করা সম্ভব।

👉মাকড় :
এক ধরনের ক্ষুদ্র মাকড়ের কারণে গাছের পাতা নিচের দিকে কুঁকড়ে যায়। প্রতিকার হিসেবে ভার্টিম্যাক অথবা ইকোম্যাক ১ মিলিলিটার হারে প্রতি লিটার পানিতে মিশিয়ে পাতার নিচের ভালোভাবে স্প্রে করতে হবে।

👉আগামরা রোগ : 
এ রোগ দেখা দিলে পুরো গাছ বা গাছের ডাল আগা থেকে শুরু করে ক্রমে নিচের দিকে মরে যায়। রোগটি ছত্রাকের আক্রমণে হয়। প্রতিকার হিসেবে কিছুটা সুস্থ অংশসহ আক্রান্ত স্থান কেটে পুড়ে ফেলা এবং কর্তিত অংশে বোর্দোমিশ্রণ বা নোইন (ছত্রাকনাশক) ২ গ্রাম/লিটার অথবা কুপ্রাভিট ৭ গ্রাম/ লিটার হারে পানিতে মিশিয়ে স্প্রে করতে হবে।

👉গ্রিনিং রোগ : 
এ রোগে পাতার মধ্যশিরা হলদে হয়ে যায় এবং শেষ পর্যায়ে হলুদাভ রঙ ধারণ করে। শিরা উপশিরাগুলো ক্রমশ গাঢ় সবুজ হতে থাকে, শিরা দুর্বল ও পাতা কুঁকড়ে যায়। এটি ভাইরাসজনিত রোগ। সাইলিড পোকা এর বাহক। তাই পোকা দমন (ব্যবস্থাপনা আগে দেয়া আছে) করতে হবে। আক্রান্ত হলে অন্য গাছে রোগ যেন না ছড়ায় সেজন্য গাছ উঠিয়ে পুড়িয়ে ফেলতে হবে।

👉ফল সংগ্রহ


পরিপক্ব অবস্থায় মাল্টা সংগ্রহ করতে হয়। সংগ্রহের সময় ফল যাতে আঘাতপ্রাপ্ত না হয়, সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। ফলের আকার অনুযায়ী গ্রেডিং করা উত্তম। পরিষ্কার কাপড় দিয়ে মুছে প্যাকেট করে বাজারজাত করতে হবে। (সংগৃহীত)